randomspeech Posted Thursday at 06:44 AM Report Share Posted Thursday at 06:44 AM বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন কিছু শব্দ রয়েছে, যেগুলো শুধু একটি শব্দ নয়, বরং একটি জাতির যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি। তেমনি একটি শব্দ হলো রাজাকার শব্দের অর্থ কি—এই প্রশ্নটির উত্তর জানার মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের নির্মম বাস্তবতা, দেশপ্রেম আর বিশ্বাসঘাতকতার গল্প। রাজাকার শব্দটির উৎপত্তি উর্দু ভাষা থেকে, যার মূল অর্থ হলো ‘স্বেচ্ছাসেবক’। তবে ১৯৭১ সালের পর এই শব্দটি বাংলাদেশের জনগণের কাছে এক নেতিবাচক ও ঘৃণিত প্রতীকে পরিণত হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন নিরীহ বাঙালিদের ওপর বর্বরতা চালাতে শুরু করে, তখন কিছু বাঙালি ব্যক্তি সেই সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তারা ছিল মূলত পাকিস্তানপন্থী এবং স্বাধীন বাংলাদেশের বিরোধী। এই ব্যক্তিরাই পরিচিত হয়ে ওঠে ‘রাজাকার’ নামে। এদের প্রধান কাজ ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য গোয়েন্দাগিরি করা, মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানানো এবং নিরীহ মানুষদের ধরে নিয়ে নির্যাতনের জন্য হস্তান্তর করা। তারা শুধু সহিংসতাই চালায়নি, বরং সমাজের ভেতর বিভাজন সৃষ্টি করে জাতিগত ঐক্যকেও চরমভাবে নষ্ট করেছিল। আজও ‘রাজাকার’ শব্দটি শুনলেই মানুষের মনে ভেসে ওঠে বিশ্বাসঘাতকতা, কাপুরুষতা এবং আত্মসমর্পণের কাহিনি। যদিও স্বাধীনতার পর তাদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, কিন্তু সময়ের আবর্তনে অনেক রাজাকার রাজনীতির ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে। ফলে এই শব্দটি কেবল অতীত নয়, বর্তমানে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হয়েছে। এই শব্দটি ইতিহাস পাঠের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদের উচিত রাজাকার শব্দের পেছনে থাকা ইতিহাস জানা এবং বুঝে শেখা, যাতে ভবিষ্যতে এমন বিভেদ, বিশ্বাসঘাতকতা আর আত্মপরিচয়ের সংকটের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সবশেষে বলা যায়, রাজাকার শব্দের অর্থ কি শুধুই একটি ভাষাগত সংজ্ঞা নয়, এটি একটি জাতির আত্মত্যাগ, দুঃখ ও প্রতিরোধের প্রতীক। ইতিহাসকে জানলে তবেই আমরা ভবিষ্যৎকে সতর্কভাবে নির্মাণ করতে পারব। Link to comment Share on other sites More sharing options...
Recommended Posts
Please sign in to comment
You will be able to leave a comment after signing in
Sign In Now